অতিরিক্ত ইলিশ খাওয়ার ক্ষতিকর দিক!!

 অতিরিক্ত ইলিশ খাওয়ার ক্ষতিকর দিক!!


ইলিশের মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই অনেকের পাতে দেখা যায় সুস্বাদু এই মাছ।তবে যাদের হরহামেশাই ইলিশ খাবার সৌভাগ্য হয় না,তাদের জন্য রয়েছে সুখবর।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় এক গবেষণায় জানা গেছে,ইলিশ বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন 'ফুড সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অব ইন্ডিয়া' তাদের সাম্প্রতিক নোটিফিকেশনে তালিকাভুক্ত করেছে ১২০ রকমের সামুদ্রিক মাছকে।এই মাছগুলো বেশি খাওয়ার ফলে শরীরে হিস্টামিন-বিষক্রিয়া হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।এই তালিকায় সার্ডিন,ম‍্যাকরেল প্রভৃতি সামুদ্রিক মাছের সঙ্গে রয়েছে ইলিশের নামও।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকেশ শর্মা জানিয়েছেন,ইলিশ মাছের অপকারিতা নির্ণয়ের জন্য এই বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়নি।

সামুদ্রিক কিছু মাছ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান,এই ধরণের কিছু মাছে হিস্টিডিন নামে একটি অ্যামাইনো এসিড অনেক বেশি মাত্রায় উপস্থিত থাকে;যা থেকে হিস্টামিন তৈরি হয়ে মানবদেহে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে।

গবেষকদের মতে,এই সামুদ্রিক মাছগুলোতে হিস্টামিন বেশি থাকায় শ্বাসের সমস্যা, অবিরল হাঁচি,সর্দি,গায়ে জ্বালা ভাব তৈরি,পেটে খিঁঁচ ধরা,ফোঁড়া হওয়ার মতো অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়।


এফএসএসআই সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, মূল সমস্যাটার জন্য আদতে দায়ী ডিস্ট্রিবিউশন চেন-এর অবহেলা এবং যথাযথ ফ্রিজিং-এর অভাব।

বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বিশদে জানালেন, যেকোনো সামুদ্রিক মাছে কমবেশি হিস্টিডিন থা সমস্যা হলো, ডিকার্বোস্কিলেজ নামে একটি উৎসেচকের প্রভাবে এই হিস্টিডিন থেকে হিস্টামিন তৈরি হয়। সেটিই আসলে ক্ষতিকারক। কিছু বিশেষ ব্যাকটেরিয়া এই উৎসেচকটিকে সংশ্লেষ করতে বা বানাতে সাহায্য করে। সমুদ্র থেকে যখন নদীতে মাছ আসে তখন তাদের শরীরে হিস্টিডিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। জলের ভেতর হিস্টিডিন থেকে হিস্টামিন তৈরির বিক্রিয়াটি হয় না, কিন্তু ডাঙায় তোলার পরে ১৫ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রায় মাছ থাকলেই ওই ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে সঠিকভাবে বরফজাত না থাকলে কিছুক্ষণের মধ্যেই হিস্টামিন তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। যদি আগাগোড়া ১৫ ডিগ্রির নিচে মাছকে রাখা যায় তাহলে ব্যাকটেরিয়াগুলো অকেজো হয়ে থাকে, বিষক্রিয়ার সমস্যাও হয় না।

আরেকটি প্রয়োজনীয় বিষয় হলো,এই সামুদ্রিক মাছগুলোতে যে হিস্টিডিন থাকে তা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।ফলে সুস্বাদু এই সামুদ্রিক মাছ খাওয়া মানবদেহের জন্য উপকরীও বটে।

খাওয়ার সময় একটু সতর্ক থাকলে আপনি নিশ্চিন্তে সুস্বাদু এই মাছ খেতে পারবেন।গবেষণায় দেখা গেছে,শরীর ১৮০মিলিগ্রাম পর্যন্ত হিস্টামিন সহ‍্য করতে পারে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই।

No comments

Powered by Blogger.