গণিতের সহজ ও মজার কৌশল!!
গণিতের সহজ ও মজার কৌশল!!
গণিত পরিমাণ,সংগঠন,পরিবর্তন ও স্থান বিষয়ক গবেষণা।গণিতের নিদিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই।গণিতে সংখ্যা ও অন্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশিসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। গণিতবিদগন বিশৃঙ্খল ও অসমাধানযুক্ত সমস্যাকে শৃঙ্খলভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া খুঁজে বেড়ান ও তা সমাধানে নতুন ধারণা প্রদান করে থাকেন।গাণিতিক প্রমাণের মাধ্যমে এই ধারণাগুলির সত্যতা যাচাই করা হয়। গাণিতিক সমস্যা সমাধান সম্পর্কিত গবেষণায় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বা শত শত বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। গণিতের সার্বজনীন ভাষা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা একে অপরের সাথে ধারণার আদান-প্রদান করেন। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা।
কিন্তু আজ চলুন সুশৃঙ্খল,নিয়মবদ্ধ প্রক্রিয়ার বাহিরে গিয়ে গণিতের কিছু মজার কৌশল শিখে নেয়া যাক। গণিতের নাম শুনেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ এগুলো ক্লাসের জটিল কোনো অঙ্ক নয়। তা ছাড়া এই অঙ্ক শিখতে খাতা বা কলমের কোনো দরকার নেই।আগেই জানিয়ে রাখা ভালো, এই অঙ্ক শিখলে শ্রেণির পরীক্ষায় যে ভালো করা যাবে, সে নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি না।তবে গণিতের দক্ষতা যে বাড়বে, এ কথা নিশ্চিত। সেই সঙ্গে গণিত নিয়ে অনেকের মধ্যে যে ভয় কাজ করে, সে ভয় কিছুটা হলেও দূর হবে। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে অঙ্ক শুরু করা যাক।
গুণ হবে মুহূর্তেইঃ
এই গুণ করতে হলে প্রথমে ৩+২=৫ করতে হবে। এবার ৩ ও ২ এর মাঝখানে যোগফল ৫ বসিয়ে দাও। তাহলেই পেয়ে গেলাম উত্তর। অর্থাৎ উত্তর: ৩২×১১= ৩৫২। এবার চাইলে তোমরা খাতা–কলম বা ক্যালকুলেটরে গুণ করে উত্তর মিলিয়ে দেখতে পারো। সুতরাং, যে সংখ্যাকে ১১ দিয়ে গুণ করব, তার অঙ্ক দুটির যোগফলকে সেই অঙ্ক দুটির মধ্যে বসিয়ে দিলেই হবে।
গুণটা কি কঠিন মনে হলো? এবার নিজেরা চেষ্টা করে দেখো।
৫২×১১
এ ক্ষেত্রে উত্তর হবে ৫+২=৭। ৭ কে গুণ্যের (যে সংখ্যাকে গুণ করা হয়। এখানে ৫২ গুণ্য) অঙ্ক দুটির মাঝখানে বসিয়ে দিলেই হয়ে যাবে গুণফল। তাহলে উত্তর:
৫২×১১= ৫৭২।
কি, গুণ করতে খাতা–কলম দরকার হলো?
আচ্ছা, আরেকটা উদাহরণ দেওয়া যাক।
৮১×১১=?
তোমার উত্তর কত হয়েছে? যদি ৮৯১ হয়, তাহলে তোমাকে অভিনন্দন। তুমি এই গণিত শিখে ফেলেছ।
তবে একটা কথা আছে। অনেক বেশি আনন্দিত হওয়ার আগে আরেকটা উদাহরণ দিই। ধরো, এবার গুণ করতে হবে—
৮৫×১১
তাহলে কী হবে? এবার তো যোগফল ৮+৫=১৩। তাহলে উত্তর কি ৮১৩৫ হবে? না। খেয়াল করে দেখো, এর আগে আমরা যে গুণ করেছি, সেখানে অঙ্ক দুটির (গুণ্যের) যোগফল ৯ বা তার কম ছিল। অঙ্ক দুটির যোগফল ৯ এর বেশি হলে নিয়মের সামান্য পরিবর্তন হবে। সে ক্ষেত্রে যোগফলের একক স্থানীয় অঙ্ক (১৩ এর একক স্থানীয় অঙ্ক ৩) অঙ্ক দুটির মধ্যে বসবে এবং দশক স্থানীয় অঙ্ক (এখানে ১৩ এর দশক স্থানীয় অঙ্ক ১) যুক্ত হয়ে যাবে প্রথম অঙ্কের সঙ্গে। এবার মিলিয়ে নাও। প্রথমে একক স্থানীয় অঙ্ক ৩ বসিয়ে হলো ৮৩৫। এবার ৮ এর সঙ্গে দশক স্থানীয় অঙ্ক ১ যোগ করলে হবে ৯। সুতরাং উত্তর: ৯৩৫।
আরেকটা উদাহরণ দেওয়া যাক।
৫৭×১১
তাহলে ৫+৭=১২।
গুণ্যের মাঝখানে একক স্থানীয় অঙ্ক ২ বসিয়ে হলো ৫২৭ এবং ৫ এর সঙ্গে দশক স্থানীয় অঙ্ক ১ যোগ করে হলো ৬। উত্তর দাঁড়াল ৬২৭।
এবার কিন্তু তোমার পালা। যত দ্রুত সম্ভব বলো তো,
৭৭×১১= কত?
যদি তোমার উত্তর ৮৪৭ হয়, তাহলে ধরে নাও, ভবিষ্যতে তুমি গণিতবিদ হওয়ার কাছাকাছি চলে গেছ। এখন শুধু বারবার অনুশীলন করতে হবে।
এখন তুমি গর্ব করে তোমার বন্ধু, মাতা–পিতা বা শিক্ষককে বলতে পারো, খাতা–কলম ছাড়া শুধু মেধা খাটিয়ে তুমি যেকোনো দুটি সংখ্যাকে ১১ দিয়ে গুণ করে দিতে পারো। সেটাও আবার কয়েক সেকেন্ডেই।
আচ্ছা, তোমাকে যদি ৯৯×১১ করতে বলা হয়? তুমি কি ভয় পাবে? মোটেও না। কারণ ৯+৯=১৮
মধ্যে বসালে হবে ৯৮৯। বাকি ১ যোগ করতে হবে ৯ এর সঙ্গে। অর্থাৎ ৯+১=১০।
উত্তর: ১০৮৯
যাওয়ার আগে আরেকটা প্রশ্ন করি। তোমাদের কারও কি মনে হয়েছে, দুই অঙ্কের সংখ্যার পরিবর্তে তিন অঙ্কের সংখ্যাকে ১১ দিয়ে গুণ করলেও কি এই নিয়ম ঠিক থাকবে? উত্তর, অবশ্যই। চলো একটা দেখা যাক।
৩১৪×১১=?
এ ক্ষেত্রে তিন অঙ্কের মধ্যের অঙ্ককে প্রথম ও তৃতীয় অঙ্কের সঙ্গে যোগ করতে হবে। যোগফল দুটি বসিয়ে দিতে হবে প্রথম ও শেষ অঙ্কের মাঝখানে। যেমন: ৩+১=৪ ও ১+৪=৫। তাহলে উত্তর: ৩১৪×১১= ৩৪৫৪।
এ ধরনের আরও অনেক সমস্যার সমাধান আমরা মাথা খাটিয়ে করব। তবে আজ এ পর্যন্তই থাক। এক দিনে বেশি শিখলে কিছুই মনে থাকবে না। এরপর কোনো একদিন শিখব, একাধিক অঙ্কের সংখ্যাকে কীভাবে অন্যান্য সংখ্যা (শুধু ১১ দিয়ে নয়) দিয়ে গুণ করা যায়।
ধন্যবাদ সবাইকে...
No comments