ওরস্যালাইনের আবিষ্কারক ডাঃ রফিকুল ইসলাম সম্পর্কে জেনে নিন

 ওরস্যালাইন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি নাম।ওরস্যালাইনের কাজ কি সেটা বাচ্চা থেকে বুড়ো সবারই জানা আছে।কিন্তু আপনি কি জানেন, এই ওরস্যালাইনের আবিষ্কারক বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ডাঃ রফিকুল ইসলাম।কতটুকুই বা আমরা জানি এই মহান মানুষটির সম্পর্কে।চলুন জেনে নেয়া যাক ডাঃ রফিকুল ইসলামের জীবনবৃত্তান্ত।

 

রফিকুল ইসলাম ছিলেন একজন বাংলাদেশী চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী। তিনি ডায়রিয়া নিরাময়ের জন্য খাবার স্যালাইন (ওরস্যালাইন) আবিষ্কারের জন্য পরিচিত। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যান্সেট তার আবিষ্কৃত খাবার স্যালাইনকে "চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার" বলে উল্লেখ করেছিল।

রফিকুল ইসলাম ১৯৩৬ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির কুমিল্লা রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ১৯৬৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।পরবর্তীতে তিনি ব্রিটেনে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঔষধ এবং স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে লেখাপড়া করেন।

এমবিবিএস পাআস করার পর তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ,বাংলাদেশ এ ২০২০ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন এবং বিভিন্ন ঔষধ নিয়ে গবেষণা করেন।

তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার চিল খাবার স্যালাইন(ওরস্যালাইন)। ১৯৭১ সালে ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে কলেরা মহামারি ছড়িয়ে পড়তে থাকে।তখন একমাত্র চিকিৎসা হিসবে শিরায় স্যালাইন(ইন্ট্রাভেনাস) দেওয়া হতো।কিন্তু এই ইন্ট্রাভেনাসেরও যখন স্বল্পতা দেখা দেয় তখন তার আবিষ্কৃত ওরস্যালাইন দিয়ে এই রোগ থেকে বহু মানুষ সুস্থ্যতা লাভ করেছিলো।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ডায়রিয়ার চিকিৎসায় স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এর ফলে, এটি "ঢাকা স্যালাইন" নামেও পরিচিতি লাভ করেছিলো।এছাড়াও বাংলাদেশি বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাক এই খাবার স্যালাইনকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলো। 

পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওরস্যালাইনকে স্বীকৃতি দেয়।

রফিকুল ইসলাম ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ২০১৮ সালের ৬ই মার্চ তিনি ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ৬ই মার্চ মরহুমের গ্রামের বাড়ী মালিপাড়ায় বিশাল জানাজা শেষে পিতামাতার কবরের পাশে চির শায়িত হন।

বিনম্র শ্রদ্ধা হে মহামানব...

No comments

Powered by Blogger.